সময় চক্র অনলাইন ডেস্ক, নারায়ণগঞ্জ:
প্রচলিত “সরকারি চাকরির আগে ‘যদি’ আর ‘কিন্তু’ থাকে”— এই ধারণাটিকে একেবারে গুঁড়িয়ে দিয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন। সম্প্রতি, সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা, মেধাভিত্তিক যাচাই এবং ন্যূনতম আবেদন ফিতে (মাত্র ১১২ টাকা) রাজস্ব বিভাগের ৭টি ক্যাটাগরির ১৪টি পদে নিয়োগ সম্পন্ন করে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে এই ভাগ্যবান ১৪ জন নতুন কর্মচারীর হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা।
জেলা প্রশাসন এই নিয়োগ প্রক্রিয়াকে অত্যন্ত দ্রুত ও শতভাগ স্বচ্ছ রাখার জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল, যা নিয়োগপ্রাপ্তদের উচ্ছ্বসিত করেছে:
মাত্র ১ হাজার ২৩৩ জন আবেদনকারীকে লিখিত পরীক্ষার জন্য ডাকা হয় গত ২৪ অক্টোবর, এবং সেই দিনেই লিখিত পরীক্ষার ফলাফলও প্রকাশ করা হয়। এটি স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার একটি বড় ধাপ ছিল।
লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার (২৮ অক্টোবর) পরপরই দ্রুত গোয়েন্দা প্রতিবেদন সংগ্রহ করা হয় (২ নভেম্বর)। এটি চূড়ান্ত নিয়োগের আগে প্রার্থীর নৈতিক অবস্থান যাচাইয়ে প্রশাসনের আন্তরিকতা প্রমাণ করে।
পুরো প্রক্রিয়াটি মাত্র ১১২ টাকা আবেদন ফিতে সম্পন্ন করা হয়, যা প্রমাণ করে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনো প্রকার আর্থিক লেনদেনের সুযোগ রাখা হয়নি।
নিয়োগপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা তাঁর অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন:
“সরকারি চাকরিতে নিয়োগের বিষয়টি আসলেই সমাজে প্রচলিত ‘যদি’ আর ‘কিন্তু’-এর ফ্রেমে আটকে ছিল। আমরা সেই ধারণা ভাঙতে চেয়েছি। শুরু থেকেই আমাদের প্রত্যয় ছিল, এই নিয়োগ ১১২ টাকাতেই সম্পন্ন হবে এবং আমরা তা পেরেছি। আমাদের প্রতিটি পর্যায়ে আমরা শতভাগ স্বচ্ছতার পরিচয় রাখতে সক্ষম হয়েছি।”
তিনি আরও বলেন, জুলাই মাসের স্পিরিট (অর্থাৎ মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি) অনুযায়ী নিয়োগ হয়েছে এবং নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের প্রতি তাঁর প্রত্যাশা, তারা যেন কর্মক্ষেত্রে শতভাগ সেবার মনোভাব নিয়ে কাজ করেন।
নিয়োগ পেয়ে আড়াইহাজারের হাবিব উল্লাহ তাঁর স্বস্তি প্রকাশ করে বলেন, “কোনো রকমের বেগ পোহাতে হয়নি। এই ধারা অব্যাহত থাকলে সরকারি চাকরির প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ফিরবে।” আরেক নিয়োগপ্রাপ্ত জুবাইদা মারুফা জানান, “এত অল্প সময়ের মধ্যে এমন স্বচ্ছ নিয়োগ আগে কখনও শুনিনি। যোগ্যরাই এগিয়ে যাবে।”
জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে অন্যান্য সরকারি দপ্তরের জন্য একটি অনুসরণীয় মডেল হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।









